রহস্যময় সমাজ – পর্ব ১: অদৃশ্য শৃঙ্খল

রহস্যময় সমাজ – পর্ব ১: অদৃশ্য শৃঙ্খল

রাত তখন প্রায় দুটো। শহর কলকাতার অলি-গলি নিস্তব্ধ, শুধু দূরে কোথাও একটা কুকুর মাঝেমধ্যে ডেকে উঠছে।
কিন্তু এই গভীর রাতেও, সল্টলেকের এক কোণে একটা ছায়ামূর্তি চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। আলো-আঁধারির মাঝে তার মুখ স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে না, শুধু একটা মৃদু সিগারেটের লালচে আলো দেখা যাচ্ছে—সেই আলো এক মুহূর্তের জন্য উজ্জ্বল হয়, তারপর আবার মিলিয়ে যায় ধোঁয়ার স্রোতে।

অন্যদিকে, শহরের আরেক প্রান্তে, কলেজ স্ট্রিটের এক পুরোনো বাড়িতে মধ্যবয়স্ক এক ব্যক্তি সজাগ বসে আছেন। তার চোখে স্পষ্ট উদ্বেগ। সামনের টেবিলে একটা পুরোনো ডায়েরি খোলা, তাতে কিছু হাতে লেখা নোটস। সে চুপচাপ বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে, যেন কেউ আসবে বলে অপেক্ষা করছে।

হঠাৎ করেই দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ! তিনবার।
তারপর একটু বিরতি, এবং আবার দু’বার।

লোকটি আস্তে করে উঠে গিয়ে দরজাটা খুলল। দরজার ওপাশে এক তরুণী দাঁড়িয়ে। চোখে কৌতূহল, মুখে কিছুটা আতঙ্ক।

“আপনিই কি অনিরুদ্ধ বাবু?”

লোকটি একটু চমকে উঠে বলল, “হ্যাঁ, কিন্তু তুমি কে?”

তরুণী পকেট থেকে একটা চিরকুট বের করল। সেই চিরকুটে লেখা ছিল—

“রহস্যময় সমাজ তোমার দিকে নজর রাখছে। সাবধান!”

অনিরুদ্ধ চিরকুটটি হাতে নিয়ে কিছুক্ষণ চুপচাপ তাকিয়ে থাকল।
তার কপালে গভীর ভাঁজ পড়েছে। এক মুহূর্তের জন্য তরুণীর দিকে তাকাল, তারপর আবার কাগজটির দিকে।

“তুমি কে? আর এটা কোথা থেকে পেলে?”

তরুণী একটু ইতস্তত করল, তারপর আস্তে করে বলল,
“আমাকে সাহায্য করুন, প্লিজ! আমার জীবন বিপদে!”

অনিরুদ্ধ ভ্রু কুঁচকে বলল,
“ভিতরে এসো।”

তরুণী দরজার ভেতরে পা রাখতেই অনিরুদ্ধ চারপাশটা ভালো করে দেখে নিল, যেন কেউ ওদের ওপর নজর রাখছে কিনা।

দরজা বন্ধ করেই সে বলল,
“এবার বলো, ব্যাপারটা কী?”

তরুণী চেয়ারে বসে একটু পানি খেল। কাঁপা কাঁপা গলায় বলল,
“আমার নাম সুদীপ্তা। আমি একটি সত্য উদঘাটন করতে গিয়েছিলাম, যা হয়তো করা উচিত হয়নি।”

অনিরুদ্ধ নীরবে তাকিয়ে থাকল।

সুদীপ্তা এক নিশ্বাসে বলে চলল,
“গত এক বছর ধরে আমি আমার বাবার মৃত্যুর রহস্য উন্মোচন করার চেষ্টা করছি। সবাই বলেছিল ওটা একটা দুর্ঘটনা, কিন্তু আমি জানতাম, ব্যাপারটা এত সহজ নয়। আমি খুঁজতে শুরু করলাম, আর সেখান থেকেই আমার জীবনের সর্বনাশের শুরু। কয়েকদিন আগে আমি এমন কিছু তথ্য পেয়েছি, যা আমাকে শেষ করে দিতে পারে!”

অনিরুদ্ধ একটু ঝুঁকে বলল,
“কী তথ্য?”

সুদীপ্তা চারপাশটা দেখে নিয়ে আস্তে করে বলল,
“একটা গোপন সংগঠনের নাম আমি জেনেছি— ‘রহস্যময় সমাজ’। আমার বিশ্বাস, এই সংগঠনই আমার বাবাকে সরিয়ে দিয়েছে।”

অনিরুদ্ধ চুপচাপ শুনছিল। এবার সে বলল,
“তুমি কীভাবে নিশ্চিত হলে?”

সুদীপ্তা ব্যাগ থেকে একটা পুরোনো চিঠি বের করল।
“এটা আমার বাবার শেষ লেখা চিঠি। উনি স্পষ্ট করে লিখেছেন, কেউ একজন ওঁর পেছনে লেগেছে। আর চিঠির শেষে শুধু একটা নাম— ‘R.S.’”

অনিরুদ্ধ চিঠিটা হাতে নিয়ে পড়তে লাগল…

অনিরুদ্ধ চিঠির পাতাগুলো উল্টে উল্টে পড়ছিল। লেখাগুলো দ্রুত লেখা, যেন চিঠির লেখক সময়ের সঙ্গে লড়াই করছিলেন।

চিঠির শেষ অংশে স্পষ্ট লেখা ছিল—

“আমি জানি, আমি আর বাঁচব না। ওরা আমাকে শেষ করে দেবে। আমার হাতে প্রমাণ আছে যা ওরা কোনোভাবেই প্রকাশ হতে দেবে না। যদি কিছু হয়, তাহলে জানবে, এটা কোনো দুর্ঘটনা নয়। এটা ঠান্ডা মাথায় খুন!”

চিঠির নিচে স্বাক্ষর— “সুব্রত দত্ত”

অনিরুদ্ধ চোখ তুলে তাকাল।
“সুব্রত দত্ত… তোমার বাবা?”

সুদীপ্তা মাথা নেড়ে সম্মতি জানাল।

“তুমি বললে তোমার হাতে প্রমাণ আছে?”

সুদীপ্তা আস্তে করে ব্যাগ থেকে একটা ছোট্ট পেনড্রাইভ বের করল।
“এটার মধ্যে কিছু ফাইল আছে। আমার বাবা একজন সাংবাদিক ছিলেন। মৃত্যুর আগে উনি এমন কিছু তথ্য জোগাড় করেছিলেন, যা ‘রহস্যময় সমাজ’-এর কালো কারবার ফাঁস করে দিতে পারত।”

অনিরুদ্ধ ফাইলটি হাতে নিল।

“তুমি কি এগুলো খুলে দেখেছ?”

“হ্যাঁ! এবং সেটাই আমার ভুল ছিল। আমি জানি না কেমন করে, কিন্তু সেই মুহূর্ত থেকে কেউ আমার পেছনে লেগেছে। আমি অনুভব করতে পারছি, আমি নজরবন্দি!”

অনিরুদ্ধ চুপচাপ বসে ছিল। চারপাশটা আরও একবার দেখে নিল সে।

“তুমি কি জানো, এই ‘রহস্যময় সমাজ’ আসলে কী?”

সুদীপ্তা ফিসফিস করে বলল,
“এটা একটা গোপন সংগঠন, যারা সমাজের বিভিন্ন স্তরে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করে রেখেছে। রাজনীতি, ব্যবসা, প্রশাসন— সব জায়গাতেই ওদের লুকিয়ে থাকা সদস্য আছে।”

“এবং তোমার বাবার কাছে এমন কিছু ছিল যা ওদের বিপদের কারণ হতে পারত?”

সুদীপ্তা মাথা নেড়ে বলল,
“হ্যাঁ! এবং এখন ওরা চায় সেই তথ্য ধ্বংস করতে… এবং আমাকেও।”

এই কথা বলেই হঠাৎ যেন সে আতঙ্কিত হয়ে উঠল।

“আমি এখানে বেশি সময় থাকতে পারব না। আমাকে লুকিয়ে থাকতে হবে। কিন্তু আমার চাওয়া একটাই— সত্য প্রকাশ পাক!”

অনিরুদ্ধ কিছুক্ষণ চুপ করে রইল। তারপর বলল,

“সত্য তো বের করাই যায়… কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, তুমি কি এর জন্য তৈরি?”

সুদীপ্তা থমকে গেল। সে কি সত্যিই প্রস্তুত?

হঠাৎ…

দরজার বাইরে কারও পায়ের শব্দ শোনা গেল।

অনিরুদ্ধ আর সুদীপ্তা দু’জনেই স্থির হয়ে গেল।

কেউ যেন দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে আছে…

সুদীপ্তা আর অনিরুদ্ধ দু’জনেই একদম স্থির হয়ে গেল।
দরজার বাইরে পায়ের শব্দ!

গভীর রাতের নিস্তব্ধতার মাঝে সেই শব্দ যেন আরও বেশি স্পষ্ট হয়ে উঠল।

সুদীপ্তা আতঙ্কিত চোখে অনিরুদ্ধের দিকে তাকাল।

“ওরা এসে গেছে?”

অনিরুদ্ধ আঙুল তুলে ইশারায় চুপ করতে বলল। আস্তে করে টেবিলের পাশে রাখা একটা ভারী বই তুলে নিল— প্রয়োজনে আত্মরক্ষার জন্য।

পায়ের শব্দ থেমে গেছে।

নিশ্চুপ…

অনিরুদ্ধ ধীরে ধীরে দরজার কাছে এগিয়ে গেল, চোখে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি। দরজার ফুটো দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে দেখল—

কেউ নেই।

কিন্তু…

ঠিক সেই মুহূর্তে একটা মোবাইলের স্ক্রিন আলো জ্বলে উঠল— কেউ একজন ফোনে কিছু টাইপ করছিল!

অনিরুদ্ধ দ্রুত পিছু হটল।

“সুদীপ্তা, আমাদের এখান থেকে বেরোতে হবে! এখনই!”

সুদীপ্তা হতবাক হয়ে বলল,
“কিন্তু কোথায় যাব?”

“এখন কথা বলার সময় নেই। কেউ আমাদের ওপর নজর রাখছে। আমাদের নিরাপদ জায়গায় যেতে হবে!”

অনিরুদ্ধ জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখল, গলির এক কোণে একটা কালো গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। তার হেডলাইট বন্ধ, কিন্তু স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে— গাড়ির ভেতরে কেউ বসে আছে।

সুদীপ্তা এবার সত্যি ভয় পেয়ে গেল।

“আমরা কী করব?”

অনিরুদ্ধ এক মুহূর্ত ভাবল, তারপর দ্রুত সিদ্ধান্ত নিল।

“আমাদের পেছনের দরজা দিয়ে বেরোতে হবে। সামনে বেরোলেই ধরা পড়ে যাব।”

সুদীপ্তা মাথা নেড়ে রাজি হলো।

দুজনে দ্রুত আস্তে আস্তে পেছনের দরজার দিকে এগোলো। দরজা খুলতেই ঠান্ডা বাতাস ভেতরে ঢুকে এলো।

তারা ধীরে ধীরে অন্ধকার গলির দিকে হাঁটতে লাগল…

কিন্তু তখনই…

একটা গাড়ির ইঞ্জিন স্টার্ট হওয়ার শব্দ শোনা গেল!

গাড়ির ইঞ্জিন স্টার্ট হওয়ার শব্দ শুনেই অনিরুদ্ধ বুঝে গেল, ওরা ওদের খুঁজে পেয়েছে!

সুদীপ্তার হাত শক্ত করে ধরে সে বলল, “দ্রুত চলো! দেরি করা যাবে না!”

দুজনে দৌড় শুরু করল। পেছনের গলি সরু, আঁধার, আর চারপাশে উঁচু দেয়াল ঘেরা।

হঠাৎ!

পেছন থেকে গাড়ির আলো গলির ভেতরে পড়ে গেল, আরেকটা ইঞ্জিনের গর্জন শোনা গেল!

সুদীপ্তা ভয়ে বলল, “ওরা আমাদের দেখেছে! এখন কী হবে?”

অনিরুদ্ধ দাঁড়াল না, শুধু বলল, “দৌড়াও! কোনোভাবেই থামবে না!”

গলির শেষে একটা পুরনো লোহার গেট ছিল। অনিরুদ্ধ এক ঝটকায় গেটটা খুলতে গেল—

কিন্তু বন্ধ! বাইরে থেকে তালা মারা!

সুদীপ্তার মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেল, “আমরা ফেঁসে গেছি!”

অনিরুদ্ধ চারপাশে তাকিয়ে একটা পুরনো সিঁড়ি দেখতে পেল, যেটা পাশের তিন তলা পরিত্যক্ত বাড়ির ছাদে উঠে গেছে।

“ওটা ধরো! উপরে উঠতে হবে!”

সুদীপ্তা হতভম্ব, “কিন্তু এত উঁচু থেকে নামব কীভাবে?”

“এখন ভাবার সময় নেই! যদি ওরা ধরে ফেলে, তার চেয়ে এই ঝুঁকি নেওয়া ভালো!”

পেছন থেকে গাড়ির দরজা খোলার শব্দ পেল ওরা। কেউ একজন নেমে এলো। ধাপে ধাপে পায়ের শব্দ কাছে আসছে!

সুদীপ্তা আর দেরি করল না, দ্রুত লোহার সিঁড়িতে পা রাখল। অনিরুদ্ধ ঠিক পেছনেই।

হঠাৎ!

“থামো!”

একজন গম্ভীর গলা শোনা গেল।

সুদীপ্তা উপরে উঠতে উঠতে একবার নিচের দিকে তাকাল—

একটা কালো কোট পরা লোক হাতে বন্দুক ধরে দাঁড়িয়ে আছে!

“থামো!”

সেই কণ্ঠস্বর শুনেই সুদীপ্তার পুরো শরীর থরথর করে কেঁপে উঠল। নিচের দিকে তাকিয়ে দেখল, কালো কোট পরা সেই রহস্যময় ব্যক্তি বন্দুক তাক করে দাঁড়িয়ে আছে!

অনিরুদ্ধ সঙ্গে সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিল, “সোজা ছাদে উঠে যাও! পেছনে তাকিও না!”

সুদীপ্তা আর এক মুহূর্ত দেরি করল না। সে যত দ্রুত সম্ভব সিঁড়ির শেষ ধাপে পৌঁছাল, অনিরুদ্ধও ঠিক তার পেছনে।

ঠিক তখনই—

গুলির শব্দ!

সুদীপ্তা একদম নিথর হয়ে গেল!

“ত…তোমার গায়ে লেগেছে?” সে আতঙ্কে ফিসফিস করে অনিরুদ্ধের দিকে তাকাল।

“না! ওটা দেয়ালে লেগেছে! চলো!”

তারা ছাদে উঠে এলো, কিন্তু সামনে আর কোনো রাস্তা নেই! নিচে লাফ দেওয়ার মতো জায়গা নেই, আশেপাশে অন্য কোনো বিল্ডিং নেই, আর পেছনে ওরা!

“আমরা ফেঁসে গেছি!” সুদীপ্তার কণ্ঠে ভয় আর হতাশা মিশে গেল।

অনিরুদ্ধ দ্রুত চারপাশ দেখে একটা ভাঙা পানির ট্যাঙ্কের পাইপ খুঁজে পেল, যেটা নিচে একটা সরু গলির দিকে নেমে গেছে।

“ওই পাইপ বেয়ে নামতে হবে!”

“তুমি পাগল? এটা তো খুব নড়বড়ে!”

“নড়বড়ে হোক, এটা ছাড়া আমাদের আর কোনো পথ নেই!”

নিচে সেই কালো কোট পরা লোক এখন ছাদে উঠতে শুরু করেছে!

“সুদীপ্তা, এখনই নেমে পড়ো!”

সুদীপ্তা সাহস করে পাইপটা ধরল, ধীরে ধীরে নামতে শুরু করল। তার হাত কাঁপছিল, কিন্তু বাঁচতে হলে এটা করতেই হবে!

অনিরুদ্ধ ঠিক তার পেছনে নামতে যাচ্ছিল—

ঠিক তখনই, একটা তীক্ষ্ণ শিসের শব্দ কানে এলো!

“ওদের চলে যেতে দাও!”

কালো কোট পরা লোকটি হঠাৎ থেমে গেল।

আর ছাদের ছায়ার মধ্যে থেকে আরেকজন বেরিয়ে এলো।

একটা দীর্ঘদেহী, সাদা শার্ট পরা, শান্ত চোখের লোক। সে আস্তে আস্তে এগিয়ে এলো আর বলল,

“ওদের এখনই ধরা যাবে না। ওরা আমাদেরই প্রয়োজন হবে।”

কালো কোট পরা ব্যক্তি ধীর কণ্ঠে বলল, “বুঝলাম। কিন্তু আপনি নিশ্চিত তো?”

সাদা শার্ট পরা লোকটা একটু হাসল, তারপর বলল—

“এই রহস্যময় সমাজে, কিছুই এমনিতে ঘটে না। ওদের পথ আমরাই ঠিক করব…”

সুদীপ্তা দ্রুত পাইপ বেয়ে নিচে নামছিল। হাত ঘেমে যাচ্ছিল, পা কাঁপছিল, কিন্তু ভয়কে জয় করতেই হবে। অনিরুদ্ধ তার ঠিক পেছনেই ছিল, কিন্তু তখনও তার মাথার মধ্যে ঘুরছিল সেই অচেনা ব্যক্তির কথা—

“ওদের এখনই ধরা যাবে না… ওরা আমাদেরই প্রয়োজন হবে।”

এটা কী মানে? তারা পালিয়ে যাচ্ছিল, তবুও ধরা পড়ল না কেন?

সুদীপ্তা প্রায় নিচে পৌঁছে গেছে। অনিরুদ্ধও দ্রুত নামল। কিন্তু ঠিক যখন তার পা মাটিতে পড়ল—

“বুম!”

তাদের পেছনের ছাদে একটা বিকট বিস্ফোরণের শব্দ হলো!

সুদীপ্তা চমকে উঠে ঘুরে তাকাল। ধোঁয়া আর আগুনের শিখা ছাদ থেকে উঠছে! যেন কেউ ইচ্ছে করেই প্রমাণ লোপাট করতে চাইছে।

অনিরুদ্ধ ফিসফিস করে বলল, “ওরা শুধু আমাদেরই নয়, পুরো ঘটনাটাকেই মুছে দিতে চায়!”

সুদীপ্তার চোখে আতঙ্ক ফুটে উঠল, “আমরা কি আসলেই পালাতে পেরেছি?”

গলির একপাশে একটা বাইক রাখা ছিল। অনিরুদ্ধ দ্রুত সেটার কাছে গিয়ে স্টার্ট দিল।

“ওঠো! এখান থেকে যত দ্রুত সম্ভব বেরোতে হবে!”

সুদীপ্তা কোনো প্রশ্ন না করেই বাইকের পেছনে উঠে বসল।

বাইক ছুটল শহরের অন্ধকার রাস্তায়…

তারা জানত না কোথায় যাচ্ছে, শুধু জানত এখনো সব শেষ হয়নি।

শহরের রাস্তার ল্যাম্পপোস্টের আলো তাদের ছায়া টেনে নিয়ে যাচ্ছিল সামনের দিকে…

অজানা গন্তব্যের দিকে…

রহস্যময় সমাজ – পর্ব ২: অন্ধকারের গভীরে – শীঘ্রই…

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *