Home remedies for long hair

ঘরোয়া উপায়ে চুল লম্বা করবেন যেভাবে

চুল হলো সৌন্দর্যের অন্যতম প্রতীক। আর আপনার সেই চুল যদি হয় লম্বা, ঘন, সতেজ ও চকচকে তাহলে তার সৌন্দর্য আরো বেড়ে যায়। তার জন্য জানতে হবে চুল পড়া বন্ধ ও ঘন করার উপায়

চুলের গঠনে 95% সাহায্য করে প্রোটিন। অর্থাৎ চুল গঠনে ও চুলকে ভালো রাখতে প্রোটিনের গুরুত্ব অনেকটাই। চুলের প্রধান প্রোটিন হলো কেরাটিন এটি একটি ফাইবারস স্ট্রাকচারাল প্রোটিন যা আপনার চুল তৈরি করতে ও তা ভালো রাখতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি আপনার চুলের ক্ষয়ক্ষতি ঠিক করতে, পুষ্টির পুনর্গঠন আর চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এই প্রোটিন। এই প্রোটিনের প্রধান উৎস হচ্ছে ডিম যা ঘরোয়া পদ্ধতিতে আপনি খুব সহজ উপায়েই ব্যবহার করে খুব ভালো ফল পেতে পারেন। এছাড়াও বায়োটিন হল আর এক অন্যতম প্রোটিন যা চুল বৃদ্ধি করতে ও পুনর্গঠন করতে সাহায্য করে। ডিমের ভিতরেই এই বায়োটিন পাওয়া যায়। প্রতিদিন একটি করে ডিম খাওয়ার মাধ্যমে আপনার শরীরে বায়োটিন প্রবেশ করতে পারে যার ফলে আপনার চুল বৃদ্ধি ও সহজে ক্ষয়ক্ষতি রোধ হতে পারে।

এছাড়াও আপনার বাড়িতে থাকা জবা ফুলের সাহায্যেও সহজেই চুল লম্বা করা সম্ভব। জবা ফুলে থাকে অ্যামাইনো অ্যাসিড যা আপনার চুলের কেরাটিন প্রোটিনের উৎপাদনকে বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি জানা যায় জবা ফুলে রয়েছে ভিটামিন সি ও ভিটামিন ই যা চুলকে ঘন, মজবুত ও লম্বা করতে সমানভাবে সাহায্য করে।

নারকেল তেল প্রোটিন পূরণে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি আমলকি, লেবু, কাঠবাদাম, গাজর, বীটরুট প্রভৃতি সমান উপকারী আপনার চুলের জন্য। আপনার চুলকে ঘরোয়া উপায়ে লম্বা করতে ও পাশাপশি চুলের গোড়া মজবুত করতে এই সকল জিনিস চমৎকার কার্যকরী। এর পাশাপাশি কিছু অভ্যাস মেনে চললে আপনার চুল দ্রুত ঘরোয়া পদ্ধতিতে লম্বা হবে, তার মধ্যে থেকে একটি অন্যতম হল, সপ্তাহে দুদিন, যেদিন যেদিন শ্যাম্পু করবেন তার আগের দিন ঘরোয়াভাবে নারকেল তেলে মেথি ভিজিয়ে উষ্ণ গরম করে তা রাতে ঘুমানোর আগে মাথার স্কেলপে হালকা করে অয়েল মেসেজ করবেন, পরের দিন শ্যাম্পু করে নেবেন। যে সকল টোটকা বা উপকরণগুলো বলা হলো তা যদি নিয়ম মেনে পালন করেন আশা রাখি ভালো ফল পাবেন ও খুব সহজেই ঘরোয়া টোটকা গুলো কাজে লাগালে লম্বা, ঘন চুল পাওয়া সম্ভব হবে।

ঘরোয়া উপায় চুল কিভাবে লম্বা করবেন, চুলের যত্ন নেবেন কি ভাবে, কেনো চুল লম্বা হয়না, টোটকার উপকারিতা, অপকারিতা সম্পর্কে বিশদে জেনে নেওয়া যাক।

ঘরোয়া পদ্ধতিতে চুল লম্বা করার উপায়

যেসব ঘরোয়া উপাদান ও পদ্ধতি গুলি অবলম্বন করলে খুব তাড়াতাড়ি চুল লম্বা করা সম্ভব, সেই উপকরণগুলি ও তাদের ব্যবহার পদ্ধতি দেখে নেওয়া যাক:

এগ মাস্ক:

চুলের প্রধান প্রোটিন কেরাটিনের মূল উৎস হল ডিম। ডিমের সাদা অংশে রয়েছে এই প্রোটিন।

 

এগ মাস্ক তৈরি করার জন্য, প্রথমে একটি ডিম নেবেন, ডিম ফাটিয়ে তার সাদা অংশটি কুসুমের থেকে আলাদা করে নেবেন। তারপর ডিমের সেই সাদা অংশে এক চা চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে ভালো ভাবে ঘন করে ফেটিয়ে নিলেই তৈরি এগ হেয়ার মাস্ক। এই মাস্ক নিয়ে মাথার স্ক্যাল্প ও চুলে ভালো করে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রাখবেন, তারপর ঠান্ডা জলে ভালো ভাবে ধুয়ে শ্যাম্পু করে নেবেন।

সপ্তাহে একদিন সঠিক উপায় মেনে এই হেয়ার মাস্কটি তৈরি করে ব্যাবহার করে দেখুন, 1 মাসেই ফল খুব ভালো পাবেন।

ভেষজ তেল:

ভেষজ জিনিস বরাবরই আমাদের জন্য উপকারীতা বহন করে এনেছে। সেই ভেষজ জিনিস কে ব্যাবহার করেই তৈরী এই তেল চুল লম্বা করতে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে থাকে।

এই তেল তৈরি করতে আপনাকে প্রথমে এককাপ নারকেল তেল তাতে এককাপ সরষের তেল মেশাতে হবে, সেই তেলে দুটি সম্পূর্ণ ফোঁটা লাল জবা, একটি লাল জবার কুঁড়ি, ২টি লাল জবা গাছের পাতা, এক টেবিল চামচ মেথি, এক টেবিল চামচ কলো জিরে, ৫-৬ টা কারিপাতা মিশিয়ে ভালো ভাবেই ফুটিয়ে নেবেন ১৫মিনিট, তারপর তেল টি ঠান্ডা করে ছাঁকনি বা পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ছেঁকে নেবে, ছেঁকে নেওয়ার পরে কাঁচের কন্টেনারে মজুত করে রাখতে পারেন ও সপ্তাহে ৩দিন ব্যাবহার করলে ভালো ফল চোখের পরবে।

সঠিক খাদ্যাভ্যাস:

আপনার চুল বেড়ে ওঠার জন্যে প্রয়োজন প্রোটিনের আর সেই প্রোটিন থাকে ডিমে, আপনার খাদ্য তালিকায় রোজ একটি করে ডিম রাখলে, আপনার চুল সঠিক মাত্রায় প্রোটিন পাবে ও বেড়ে উঠবে। এর পাশাপাশি ভিটামিন এ, ভিটামিন সি ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড খাওয়া খুবই ভালো তা চুলকে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে, নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে ও আপনার চুল কে মজবুত করে তোলে। তাই সঠিক খাদ্যাভ্যাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিয়ম মেনে আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় একটি করে ডিম, লেবু, আমলকী, আপেল, গাজর, বিট রাখলে প্রাকৃতিক ভাবেই আপনার চুল দ্রুত বেরে উঠবে ও সুন্দর হবে।

রোজমেরি জলের উপকারিতা:

আপনার বাড়িতে যদি থাকে রোজমেরির গাছ তাহলে তা কাজে লাগিয়েই আপনার চুল হয়ে উঠতে পারে কিছু দিনের মধ্যেই বেশ লম্বা ও তার পাশাপশি আপনার স্কেল্পে গজাবে বেবি হেয়ারও, রোজমেরির জল আপনার মাথার ত্বকের রক্ত ​​​​প্রবাহের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে এবং চুলের ফলিকলগুলিকে সক্রিয় করে, ফলে চুল হয়ে উঠবে ঘন, কালো ও লম্বা।

রোজমেরি জল ব্যাবহারের নিয়ম হলো, এক থেকে দুই আঙ্গুলের মতন লম্বা দুটি ডালকে 300ml জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে সারাদিন। তারপর সেই জল একটা স্প্রে বোতলে স্টোর করে রাখতে পারবেন রুম তাপমাত্রায় দু – সপ্তাহ, প্রতিদিন রাতে শোয়ার আগে আপনার স্কেল্পে আপনার বানানো রোজমেরির জল ভালো ভাবে স্প্রে করে হালকা হাতে মেসেজ করে নেবেন, খুব ভালো ফল পাবেন।

পিঁয়াজের রস:

পেঁয়াজে রয়েছে সালফার কোলাজেন যা চুলের ফলিকল তৈরিতে সাহায্য করে। চুলের নিজস্ব প্রোটিন, কেরাটিন উৎপাদনের হার বাড়িয়ে তুলতেও সাহায্য করে পেঁয়াজের রস। এছাড়া পেঁয়াজের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, যা চুলের গোড়ায় হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের মাত্রা কমায় ফলে চুল পড়া কম হয়, গোড়া মজবুত হয় চুল মাঝখান থেকে ভেঙ্গে পরে না ও চুলকে লম্বা হতে সাহায্য করে তার পাশাপাশি চুল পাঁকা বন্ধ করে চুলকে ঘন কালো করে তোলে।

পিঁয়াজের রস চুলে দেওয়ার নিয়ম হলো, চুলের লেন্থ অনুযায়ী একটি পিয়াঁজ নেবেন, সেই পিয়াঁজ টির থেকে রস বের করে নিয়ে তাতে নারকেল তেল, পরিমাণ যদি নেন একটি মাঝারি ধরনের পিয়াঁজ তাহলে 2টেবিল চামচ নারকেল তেল, 1টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল ও 2টি ভিটামিন ই কেপসুল ভালো ভাবে মিশিয়ে শ্যাম্পু করার এক ঘন্টা আগে আপনার স্কেল্পে ভালোভাবে ম্যাসেজ করে নেবেন ও ১ ঘন্টা পড়ে ঠান্ডা জল দিয়ে ভালো ভাবে ধুয়ে শ্যাম্পু কারে নেবেন৷

চুলের যত্ন নেবেন কি ভাবে

সঠিক নিয়ম মেনে শ্যাম্পু:

সপ্তাহে ৩ থেকে ৪ দিন শ্যাম্পু ব্যাবহার করুন আর নিশ্চিত করুন যে আপনি যেই শ্যাম্পু ও কন্ডিশনারটি ব্যাবহার করছেন তা যেন সালফেট মুক্ত হয়। শ্যাম্পু ব্যাবহারের সময় কিছুটা পরিমাণ জলে, যেমন হাফ কাপ জলে একপাতা শ্যাম্পু আপনার চুলের লেনথ অনুযায়ী এই অনুপাতে মিশ্রণটি নিয়ে শ্যাম্পু করবেন। ও শ্যাম্পু করার পরে সালফেট মুক্ত কন্ডিশনার দিয়ে আরও একবার ঠান্ডা জলে ভালো ভাবে ধুয়ে ফেলুন এতে আপনার চুলে সরাসরি রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার হবেনা আর চুল ভালো থাকবে।

ভেজা চুল না আঁচরানো:

চুল ধোয়ার আগে ভালো ভাবে আঁচরে নেবেন, কিন্তু শ্যাম্পু করার পরে বা চুলে জল দেওয়ার পরে ভেজা অবস্থায় চুল আঁচরাবেন না, কারণ; ভেজা অবস্থায় চুলের গোড়া আলগা থাকে ফলে তখন চুল আঁচরালে চুল উঠে আসে খুব সহজেই, তাই ভেজা চুল ভালো ভাবে শুকিয়ে তারপর আঁচড়ানো উচিৎ।

চিরুনির সঠিক ব্যবহার:

চিরুনি নিয়মিত পরিষ্কার করবেন, পরিষ্কার চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ালে চুল ভালো থাকে। আর সবথেকে ভালো হয় আপনি যদি নিম কাঠের তৈরি চিরুনি ব্যাবহার করেন। নিম কাঠের তৈরি চিরুনি ব্যবহার করলে খুশকি দূর হবে, চুল পড়া ও চুলকানি রোধ হবে এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে চুলের বৃদ্ধিকে বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে এই নিম কাঠের তৈরি চিরুনি।

চুলের আগা ফাঁটা রোধ করুন:

চুলের আগা ফাঁটা রোধ করতে রাতে ঘুমানোর সময় কখনই চুল খোলা রাখবেন না। ভালো ভাবে চুল আঁচড়ে হালকা হাতে স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করুন। তারপর একটি বেনী করে চুল টা বেঁধে নিন, সেই বেণী টিকে চুলের ফিতে দিয়ে ভালোভাবে মুরে রাখুন এর ফলে ঘুমের মধ্যে নড়াচড়ার ফলেও আপনার চুল বারবার ঘষা খাবে না ফলে চুলের আগা ফাঁটা বন্ধ হবে ও চুলের মাঝখান থেকে ফেঁটে যাওয়াও কমবে এতে চুল তাড়াতাড়ি লম্বা হবে।

চুলে হিট না দেওয়া:

হিট ব্যাবহারে চুল নষ্ট ও ফেঁটে হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে। রেগুলার হিট দেওয়া যেহেতু চুলের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো না, তাই যতটা সম্ভব কম হিট স্টাইলিং ব্যাবহার করা উচিত। আর যদি আপনাকে প্রফেশনের জন্য রেগুলার হিট করতেই হয় তাহলে ভালো ব্র্যান্ডের স্ট্রেইটনার ব্যাবহার করতে হবে। চুলে স্টাইল করার আগে স্টেটনারের হিট কম করে তা ব্যবহার করবেন। এতে চুলের ক্ষতি কম হবে। এমন স্ট্রেটনার কিনবেন যাতে তাপমাত্রা বাড়ানো ও কমানো যায়। ও মাঝে মাঝে সামান্য গরম করে চুলে অলিভ অয়েল ম্যাসাজ করবেন হিট দেওয়ার ফলে যদি চুল খারাপ হয়ে গিয়ে থাকে, সেই সমস্যার সমাধান হবে।

কেনো চুল লম্বা হয়না

জেনেটিক কারণ:

জেনেটিক সূত্রে আপনার পরিবারের লোকেদের কম চুল, চুল পরা বা চুল লম্বা না হলে পরবর্তী প্রজন্ম হিসেবে আপনার ও সেই ধারাই দেখা দেবে।

হেয়ার ব্রেকেজ:

আপনি চুলের সঠিক যত্ন না করলে হেয়ার ব্রেকেজ দেখা দেয় ফলে চুল বারবার ভেঙ্গে যায় আর লম্বা হতে পারেনা।

থাইরয়েড প্রবলেম:

আপনার থাইরয়েড প্রবলেম থাকলে চুলের গ্রোথ কমে আসবে, চুল পরতে থাকবে আর চুল লম্বা হবে না।

হেলদি লাইফস্টাইল মেনটেইন না করা:

ভালো চুলের জন্য আপনাকে সর্বপ্রথম ভালো হেলদি লাইফস্টাইল মেনটেইন করতে হবে। তবেই ভালো হেলদি লম্বা চুল আপনি পেতে পারেন।

হরমোনাল ইমব্যালেন্স:

আপনার শরীরের মধ্যে যদি হরমোনাল ইমব্যালেন্স ঘটে তাহলে চুল পরে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয় এর ফলে চুল লম্বা হতে সমস্যা হয়।

ঘরোয়া উপায়ে চুল লম্বা করার উপকারীতা

  1. সহজলভ্য: খুব সহজেই উপকরণ গুলি আপনি পাবেন, সবই ঘরোয়া উপকরণ।
  2. সকলের ব্যাবহার যোগ্য: ঘরোয়া উপকরণ ব্যবহৃত হয়েছে তাই আপনার ঘরের ছেলে – মেয়ে, প্রাপ্ত বয়স্ক, শিশু সকলেই ব্যাবহার করতে পারবে।
  3. সাইড এফেক্ট নেই: কোনো প্রকার রাসায়নিক উপকরণ নেই সবই প্রাকৃতিক তাই আপনার বা আপনার পরিবারের কারোর কোনো সাইড এফেক্ট হবেনা।
  4. কার্যকরী: ঘরোয়া, প্রাকৃতিক উপকরণ হওয়ার ফলে আপনি উপকার পাবেন ও সফল ভাবে কার্যকারীতা লাভ করবেন।
  5. দ্রুত ফলদায়ক: চুলের জন্য প্রয়োজনীয় সকল উপকরণ যেমন- ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, কেরাটিন, বায়োটিন এই সকল কিছুর প্রাকৃতিক উপকরণ আপনি ব্যাবহার করার ফলে তা দ্রুত ফলদায়ক হবে।

ঘরোয়া উপায়ে চুল লম্বা করার অপকারিতা

সাধারণত ঘরোয়া ও প্রাকৃতিক উপকরণ হওয়ায় আপনার চুলে কোনরকম সাইট এফেক্ট করবে না তবে আপনার যদি এলোভেরা বা লেবুর রসে এলার্জি থাকে তাহলে সেই সকল উপকরণ বাদ দিয়ে বাকি প্রাকৃতিক উপকরণ ব্যবহার করে দেখতে পারেন অবশ্যই ভালো ফল পাবেন।

অন্যান্য পরামর্শ

  1. সপ্তাহে অন্তত 2দিন রাতে ঘুমনোর আগে স্কেল্পে হেয়ার অয়েল ম্যাসাজ করবেন।
  2. সপ্তাহে 2 থেকে 3দিন সালফেট মুক্ত শ্যাম্পু দিয়ে হেয়ার ওয়াশ করবেন।
  3. সপ্তাহে একদিন ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপায়ে হেয়ার প্যাক বা হেয়ার মাস্ক বানিয়ে ব্যাবহার করবেন।
  4. শ্যাম্পু ব্যবহারের পরে ভালো ভাবে কন্ডিশনার অ্যাপ্লাই করে চুল টা ধুয়ে নেবেন।
  5. ভেজা চুল আগে ভালো ভাবে শুকিয়ে তারপর আঁচরাবেন।

আপনার চুলকে লম্বা ও ভালো রাখার জন্য ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপায় গুলি অনেক বেশি কার্যকারী ও ফলদায়ক। উপরে দেওয়া পরামর্শ গুলি সঠিক ভাবে নিয়ম মেনে সঠিক উপায়ে অ্যাপ্লাই করতে হবে, তাহলে সঠিক ফল লাভ করতে পারবেন। আপনার চুলকে লম্বা ও ঘন করতে ঘরোয়া টোটকা গুলি লাভ জনক। চুলের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি যে সকল ভিটামিন, যেমন ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, বায়োটিন, কেরাটিন, প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার প্রতিদিনকার খাদ্যতালিকায় যুক্ত করতে হবে। প্রতিদিন নিয়ম মেনে সঠিক খাদ্য গ্রহন, হেয়ার প্যাক ব্যবহার, হেয়ার ম্যাসাজ, ঘরোয়া উপায়ে চুলের যত্ন করে চুলকে লম্বা, ঘন ও মজবুত করে তুলুন।

FAQ (Frequently Asked Questions)

ভেষজ তেল চুল কে শক্তিশালী করতে, ক্ষতিগ্রস্থ চুল মেরামত করতে এবং চুল পড়া বন্ধ করতে দারুন কার্যকরী। আপনার মাথার ত্বকে ভালভাবে তেল ম্যাসাজ করলে চুলের ফলিকলের সংখ্যা বারে, ও সঠিক রক্ত চলাচল হয় ফলে চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য হয়। এছাড়াও তেলে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল উপাদান, যা নতুন চুল গজাতে ও চুল মজবুত করতে সাহায্য করে।

সপ্তাহে ৩ থেকে ৪ দিন শ্যাম্পু  করা ভালো তবে আপনি কোথায় থাকেন সেইখানের অবহাওয়া, জলবায়ুর উপর নির্ভর করে প্রতিদিনের শ্যাম্পু করা। আপনার চুল যদি ধুলো, ময়লার মধ্যে থাকে তাহলে অবশ্যই তা ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার রাখা উচিৎ।

চুলের বৃদ্ধিতে আমলকি সাহায্য করে, এতে আছে ফাইটো-নিউট্রিয়েন্ট, ভিটামিন ও মিনারেল। যা আপনার স্ক্যাল্পে রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে, তার পাশাপাশি আপনার চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। কন্ডিশনিং করে আমলকি আপনার চুল ভালো রাখতেগুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, ও ঘন, কালো পুষ্টিকর করে তোলে।

বিটরুটের রসে থাকে আয়রন, ফোলেট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আপনার চুলের স্বাস্থ্যকর বৃদ্ধি এবং চুলের ফলিকলকে শক্তিশালী করে, চুল পড়া কমায় এবং চুলকে সতেজ করে তোলে। তাই আপনি যদি রোজ এক গ্লাস করে বিটরুটের রস খান তা আপনার চুলের জন্য খুবই উপকারি হবে। তার পাশাপাশি আপনি যদি বিটরুটের রস দিয়ে মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করেন তাহলে রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং ছিদ্র খুলে দেয়, চুলের ফলিকলকে পুষ্ট করে এবং চুল পড়া কমায়।

পেঁয়াজের রসে থাকে সালফার কোলাজেন যা চুল উৎপাদনে সহায়তা করে, চুলকে মজবুত, ঘন ও সমর্থন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে, তার পাশাপাশি চুল পড়া রোধ করতে এবং মাথার ত্বকে খুসকি নিবারণ করতে সাহায্য করে, এবং এই পিয়াঁজের রস চুলে প্রয়োগ করার সময় চুলের বৃদ্ধি বাড়াতে অতিরিক্ত সালফার যোগ করতে পারে। তার সাথে, পেঁয়াজের  কোলাজেনের সাহায্যে একটি সুস্থ ত্বক এবং চুলের ফলিকল তৈরি হয় যা চুল কে লম্বা করতে সাহায্য করে।