কিসমিস — এই ছোট্ট, মিষ্টি শুকনো ফলটি আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসে বহুদিন ধরেই জায়গা করে নিয়েছে। কখনো মিষ্টির স্বাদ বাড়াতে, কখনো বা স্বাস্থ্যকর স্ন্যাক্স হিসেবে কিসমিসের ব্যবহার খুবই জনপ্রিয়। পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ফলটির প্রতি মানুষের আগ্রহ যেমন প্রচুর, তেমনি কিছু বিভ্রান্তিও রয়েছে।
অনেকে মনে করেন, কিসমিস খেলে দ্রুত ওজন বেড়ে যায়। অন্যদিকে, কেউ কেউ বলেন নিয়ম মেনে খাওয়া হলে কিসমিস শরীরের জন্য খুবই উপকারী। তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠে — কিসমিস খেলে কি মোটা হয়?
এই লেখায় আমি বিজ্ঞানের আলোকে বিশ্লেষণ করবো কিসমিসের প্রকৃত প্রভাব সম্পর্কে। জানতে চেষ্টা করবো, সত্যিই কি কিসমিস আমাদের ওজন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে নাকি এটি সঠিকভাবে গ্রহণ করলে স্বাস্থ্যকর জীবনধারার অংশ হতে পারে। চলুন, বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং গবেষণার ভিত্তিতে খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ শুরু করি।
কিসমিস খেলে কি মোটা হয়?
হ্যাঁ, অতিরিক্ত পরিমাণে কিসমিস খেলে মোটা হওয়ার ঝুঁকি থাকে। কিসমিসে প্রাকৃতিক চিনি (ফ্রুক্টোজ ও গ্লুকোজ) এবং ক্যালরির মাত্রা তুলনামূলকভাবে বেশি, যা অতিরিক্ত গ্রহণ করলে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি জমা হতে পারে এবং ওজন বাড়তে পারে। তবে বাস্তব অভিজ্ঞতা বলছে, যদি কিসমিস নিয়ম মেনে, পরিমিত মাত্রায় খাওয়া হয় — যেমন প্রতিদিন মাত্র ২০-৩০ গ্রাম বা এক মুঠো কিসমিস — তাহলে এটি শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি যোগ না করে বরং পুষ্টির ঘাটতি পূরণে সাহায্য করে। তাই আমি বলবো, কিসমিস খাওয়া মোটা হওয়ার কারণ নয়, বরং অতিরিক্ত খাওয়ার অভ্যাসই মূল সমস্যা।
অনেকেই কিসমিসকে স্বাস্থ্যকর খাদ্য মনে করে নির্দ্বিধায় বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেলেন। আবার কেউ কেউ মনে করেন, কিসমিস খেলেই মোটা হয়ে যাওয়া নিশ্চিত!
তবে বাস্তব অভিজ্ঞতা ও পুষ্টিবিজ্ঞান বলছে, সত্যিটা একটু ভিন্ন এবং একটু সূক্ষ্ম।

চলুন আরেকটু স্পষ্ট করে বলি —
কিসমিস এমন এক ধরনের শুকনো ফল, যাতে প্রাকৃতিক চিনি (ফ্রুক্টোজ ও গ্লুকোজ) এবং ক্যালরির মাত্রা তুলনামূলকভাবে বেশি। উদাহরণস্বরূপ, ১০০ গ্রাম কিসমিসে প্রায় ৩০০ ক্যালরি থাকে — যা একটি মাঝারি পরিমাণ খাবারের সমান ক্যালরি। সুতরাং, যদি দৈনিক চাহিদার অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ করা হয়, তাহলে অবশ্যই ওজন বাড়ার ঝুঁকি থাকে। অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়া মানে শরীরে অপ্রয়োজনীয় ক্যালরি সঞ্চিত হওয়া, যা সময়ের সাথে সাথে ফ্যাট রূপে জমে যেতে পারে।
তবে এর মানে এই নয় যে কিসমিস খাওয়াই ক্ষতিকর। বরং আমি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, যারা সঠিক মাত্রায় — যেমন প্রতিদিন এক মুঠো (২০–৩০ গ্রাম) কিসমিস খান, তারা কিসমিসের পুষ্টিগুণের সুবিধা পান এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সক্ষম হন।
কিসমিস ফাইবার সমৃদ্ধ, যা হজমে সহায়তা করে এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা অনুভব করাতে সাহায্য করে। ফলে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে আসে এবং অপ্রয়োজনীয় খাবার খাওয়া কমে। এছাড়া কিসমিসে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, আয়রন, পটাশিয়াম ও ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স — যা শরীরের সামগ্রিক সুস্থতার জন্য অপরিহার্য।
আরও পড়ুন — প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত – কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা
আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বললে, যখন আমি ওজন কমানোর পরিকল্পনায় ছিলাম, তখন প্রতিদিন সকালে ২০–২৫টি ভেজানো কিসমিস খেতাম। নিয়মিত ব্যায়াম ও সঠিক ডায়েটের সাথে মিলিয়ে খাওয়ায় কিসমিস আমার শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি যোগ করেনি, বরং শক্তি জুগিয়েছিল এবং পেট ঠান্ডা রাখত। তবে যখন অনিয়ন্ত্রিতভাবে বেশি কিসমিস খাওয়া হত (বিশেষ করে খাবারের পরপর মিষ্টি লাগার কারণে), তখন ওজন একটু একটু করে বাড়তে শুরু করেছিল।
সংক্ষেপে বলা যায়:
- অতিরিক্ত কিসমিস খেলে মোটা হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
- পরিমিত মাত্রায় নিয়ম মেনে খেলে কিসমিস ওজন বাড়ায় না বরং স্বাস্থ্যকে সমর্থন করে।
তাই স্মার্ট সিদ্ধান্ত হলো — সঠিক পরিমাণে কিসমিস গ্রহণ করুন, খাদ্যাভ্যাস ও মোট ক্যালরি নিয়ন্ত্রণের দিকে নজর রাখুন।
একই রকম ভাবে খেজুরও এমনি একটা ফল — খেজুরের বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে, সেটাও আপনার জেনে রাখা উচিত।
এবার চলুন কিসমিস আরো কিছু অজানা তথ্য জেনে নেওয়া যাক —
কিসমিস খাওয়ার নিয়ম
প্রতিদিন কত গ্রাম কিসমিস খাওয়া উচিত?
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ গ্রাম কিসমিস খাওয়া আদর্শ। এই পরিমাণে প্রায় ২৫–৩৫টি কিসমিস দানা পড়ে, যা শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ফাইবার, ভিটামিন ও মিনারেল সরবরাহ করতে যথেষ্ট।
নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলি, আমি যখন প্রতিদিন সকালে এক মুঠো (প্রায় ২৫টি) কিসমিস খেতাম, তখন পেট ঠান্ডা থাকত এবং দীর্ঘক্ষণ ক্ষুধা লাগতো না। তবে যখন বেশি খেতাম, তখন ওজন বাড়ার প্রবণতা লক্ষ্য করেছি।
👉 মনে রাখবেন:
- যদি আপনি ওজন কমাতে চান, তাহলে ২০–২৫টি কিসমিস যথেষ্ট।
- যদি ওজন বাড়ানোর চেষ্টা করেন, তবে একটু বেশি খেতে পারেন, তবে সেটা যেন ডাক্তারের পরামর্শক্রমে হয়।
কখন খেলে কিসমিস সর্বোচ্চ উপকার দেয়? (সকাল/খালি পেটে)
সকালে খালি পেটে ভেজানো কিসমিস খাওয়া সবচেয়ে উপকারী।
ভেজানো কিসমিস শরীরের হজম ক্ষমতা বাড়ায়, টক্সিন বের করতে সাহায্য করে এবং দিনভর শক্তি জোগায়।
ব্যক্তিগত টিপস:
আমি রাতে ২০–২৫টি কিসমিস অল্প পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই কিসমিস এবং পানি একসাথে খেতাম। এতে পেট হালকা থাকত এবং হজমও ভালো হতো।
পানিতে ভিজিয়ে খাওয়া vs সরাসরি খাওয়া
- ভেজানো কিসমিস: সহজে হজম হয়, শরীর বেশি পুষ্টি শোষণ করতে পারে, এবং পাকস্থলী ও অন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়ায়।
- সরাসরি কিসমিস: এতে চিনি ঘনভাবে থাকে, ফলে অতিরিক্ত খাওয়া হলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়তে পারে।
সরাসরি খেতে হলে অবশ্যই পরিমাণে সংযমী হওয়া উচিত। আর ভেজানো কিসমিস খাওয়া সব দিক থেকে স্বাস্থ্যকর বিকল্প।
কিসমিস খেলে শরীরের উপর কী প্রভাব পড়ে?
হজম শক্তি বৃদ্ধিতে ভূমিকা
কিসমিসে প্রচুর ফাইবার থাকে, যা হজম প্রক্রিয়াকে মসৃণ করে। এটি অন্ত্রের চলাচল উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে। নিয়মিত ভেজানো কিসমিস খেলে পেট পরিষ্কার থাকে এবং শরীরে হালকা অনুভূত হয়।
শক্তি সরবরাহে সহায়তা
কিসমিস একটি প্রাকৃতিক এনার্জি বুস্টার। এতে থাকা প্রাকৃতিক চিনি (গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ) দ্রুত শরীরকে শক্তি দেয়। যারা শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করেন, তাদের জন্য কিসমিস একটি অসাধারণ স্ন্যাক্স হতে পারে।
আমি নিজে জিমে যাওয়ার আগে মাঝেমধ্যে কিসমিস খাই, যাতে ব্যায়ামের সময় শক্তি ধরে রাখতে পারি।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য
কিসমিসে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম রয়েছে, যা শরীরের সোডিয়াম ব্যালান্স করে এবং রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত কিসমিস খান, তাদের উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কম থাকে।
কিসমিস ওজন বাড়াতে সাহায্য করে কখন?
অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে কী সমস্যা হতে পারে
যখন আপনি মাত্রাতিরিক্ত কিসমিস খান, তখন শরীরে অতিরিক্ত চিনি ও ক্যালরি প্রবেশ করে। এর ফলে
- ওজন বৃদ্ধি হতে পারে
- রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে
- দাঁতের ক্ষয় (dental cavities) হতে পারে
শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি জমার সম্ভাবনা
কিসমিস ছোট হলেও এতে ক্যালরির ঘনত্ব অনেক বেশি। অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়ার ফলে অবচেতনভাবেই দৈনিক ক্যালরির চাহিদা ছাড়িয়ে যেতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাট হিসেবে জমে। ফলে সময়ের সাথে সাথে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
ওজন নিয়ন্ত্রণে কিসমিসের ভূমিকা
কিসমিসে থাকা ফাইবার ও স্বাস্থ্যকর শর্করা কিভাবে ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে
কিসমিসে থাকা ডায়েটারি ফাইবার হজমের গতি নিয়ন্ত্রণ করে এবং খাবার হজম হতে বেশি সময় নেয়। ফলে ক্ষুধা কম অনুভূত হয় এবং অপ্রয়োজনীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে। এতে ওজন কমানোর প্রচেষ্টায় সহায়তা হয়।
ক্ষুধা কমানো ও পেট ভর্তি রাখার গুণ
ভেজানো কিসমিস খেলে পেট অনেক সময় ভরা থাকে, যার ফলে অপ্রয়োজনীয় স্ন্যাকিং কমে। যারা হঠাৎ হঠাৎ খিদে পায়, তাদের জন্য সকালে বা বিকেলে কিছু ভেজানো কিসমিস একটি স্বাস্থ্যকর বিকল্প হতে পারে।
কোন ধরণের কিসমিস সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর?
সবুজ বনাম কালো কিসমিস
- সবুজ কিসমিস সাধারণত কম মিষ্টি এবং একটু টক-মিষ্টি স্বাদের হয়। এতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের পরিমাণ কিছুটা কম হলেও হজমে ভালো সহায়ক।
- কালো কিসমিস অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর, হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং ক্যান্সার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে পারে। তবে এতে চিনি কিছুটা বেশি থাকে।
ব্যক্তিগতভাবে আমি সকালবেলা ভেজানো কালো কিসমিস খেতে পছন্দ করি, কারণ এটি বেশি শক্তি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট দেয়।
জৈব (Organic) কিসমিস কেন বেছে নেওয়া উচিত?
জৈব কিসমিস কীটনাশক, রাসায়নিক সার বা প্রিজারভেটিভ ছাড়া উৎপাদিত হয়। ফলে এটি শরীরের জন্য তুলনামূলক নিরাপদ এবং পুষ্টিগুণ অটুট থাকে। যারা স্বাস্থ্যসচেতন বা ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চান, তাদের জন্য জৈব কিসমিস সর্বোত্তম বিকল্প।
অতিরিক্ত টিপস বা সাবধানতা
কিসমিস খাওয়ার সময় কতটুকু পরিমাণে খাওয়া নিরাপদ?
সাধারণ সুস্থ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দিনে ২০–৩০ গ্রাম কিসমিস খাওয়া নিরাপদ এবং উপকারী। এটি প্রায় এক মুঠো কিসমিসের সমান।
যদি আপনি অতিরিক্ত কিসমিস খান, তাহলে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি এবং প্রাকৃতিক চিনি প্রবেশ করে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে এবং ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
👉 নিরাপদ চর্চা:
- কিসমিস ভেজানোর পর পানি ফেলে না দিয়ে সেই পানি পান করুন। এতে অতিরিক্ত খনিজ উপাদানও শরীরে প্রবেশ করবে।
- খুব খিদে পেলে স্ন্যাক্স হিসেবে এক মুঠো কিসমিস খান, তবে দিনে একবারের বেশি না।
- কিসমিসের সাথে উচ্চ চিনি যুক্ত অন্যান্য খাবার (যেমন চকোলেট, মিষ্টি) একসাথে খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষ সতর্কতা
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিসমিস খাওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ নয়, তবে সংযমের সাথে খেতে হবে।
কেন সাবধান থাকা জরুরি?
- কিসমিসে প্রাকৃতিক চিনি (ফ্রুক্টোজ ও গ্লুকোজ) বেশি থাকে।
- দ্রুত রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য টিপস:
- দিনে সর্বোচ্চ ১৫–২০টি ভেজানো কিসমিস খান, তাও চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে।
- খালি পেটে না খেয়ে খাবারের সাথে বা পরে খান, যাতে শর্করার দ্রুত বৃদ্ধির ঝুঁকি কমে।
- ভেজানো কিসমিস খাওয়া সরাসরি কিসমিস খাওয়ার চেয়ে বেশি নিরাপদ।
আরও পড়ুন — দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় – ওষুধ ছাড়াই সুগার কমান প্রাকৃতিকভাবে
অ্যালার্জি বা বিশেষ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা
যদিও কিসমিস একটি প্রাকৃতিক খাবার, তবে কিছু মানুষ এতে অ্যালার্জি বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করতে পারেন। যেমন:
- ত্বকে চুলকানি বা র্যাশ
- পেট ব্যথা বা অস্বস্তি
- মাথা ঘোরা বা বমি বমি ভাব
বিশেষ সতর্কতা:
- যারা সালফাইট সংবেদনশীল (Sulphite Sensitive), তারা জৈব (Organic) কিসমিস বেছে নিন।
- প্রথমবার খাওয়ার পরে শরীরের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করুন। যদি কোনো সমস্যা হয়, অবিলম্বে বন্ধ করুন এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
- শিশুরা কিসমিস খেলে কখনও কখনও গলা আটকে যেতে পারে, তাই তাদের পর্যাপ্তভাবে চিবিয়ে খাওয়াতে উৎসাহিত করুন।
উপসংহার
কিসমিস একটি ছোট কিন্তু পুষ্টিগুণে ভরপুর খাবার। এতে থাকা প্রাকৃতিক চিনি, ফাইবার, ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ শরীরের শক্তি যোগায়, হজম শক্তি বাড়ায় এবং স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়তা করে।
তবে, যেমন বলা হয়— “অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়,” — তেমনি কিসমিসের ক্ষেত্রেও সংযম বজায় রাখা জরুরি।
👉 প্রতিদিন নিয়মিত এবং সীমিত মাত্রায় কিসমিস খেলে আপনি অনেক স্বাস্থ্য উপকার পেতে পারেন, ওজন বাড়ার আশঙ্কা ছাড়াই।
👉 যদি আপনার নির্দিষ্ট কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে (যেমন ডায়াবেটিস, অ্যালার্জি), তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কিসমিস খাওয়া উচিত।
👉 নিজের স্বাস্থ্য লক্ষ্য ও খাদ্য পরিকল্পনার সাথে মিলিয়ে কিসমিসের পরিমাণ ঠিক করুন — তবেই আপনি এর প্রকৃত উপকারিতা উপভোগ করতে পারবেন।
সুস্থ থাকুন, সচেতন থাকুন। 🌿
আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না!
এই লেখাটি পড়ে কিসমিস সম্পর্কে আপনার ধারণা যদি আরও পরিষ্কার হয়ে থাকে, তাহলে দয়া করে একটি ছোট্ট রেটিং বা রিভিউ দিয়ে আমাদের উৎসাহ দিন। ⭐⭐⭐⭐⭐
আপনার ফিডব্যাক আমাদের আরও ভালো কনটেন্ট তৈরি করতে অনুপ্রাণিত করবে।
আপনার মূল্যবান মতামতই আমাদের শক্তি। ❤️
আরো জানতে চান?
পোস্টের নিচে আমরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর (FAQ) যুক্ত করেছি —
যেগুলো পড়লে কিসমিস খাওয়া নিয়ে আপনার সব সন্দেহ আরও পরিষ্কার হবে।
👉 চলুন, এখনি FAQ সেকশনে চোখ রাখি! 👇
কিসমিস কি ওজন বাড়ায়?
হ্যাঁ, অতিরিক্ত পরিমাণে কিসমিস খেলে ওজন বাড়তে পারে কারণ এতে উচ্চ মাত্রায় প্রাকৃতিক চিনি ও ক্যালরি থাকে।
প্রতিদিন কতটা কিসমিস খাওয়া নিরাপদ?
সাধারণত ২০-৩০ গ্রাম কিসমিস দৈনিক খাওয়া নিরাপদ। তবে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য অবস্থার ওপর নির্ভর করে এই মাত্রা সামান্য কম বা বেশি হতে পারে। বিশেষ অবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উত্তম।
সকালে খালি পেটে কিসমিস খাওয়া কি ভালো?
হ্যাঁ, সকালে খালি পেটে ভিজানো কিসমিস খেলে হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয় এবং শরীর ডিটক্সিফাই করতেও সাহায্য করে।
কিসমিস ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিরাপদ কি?
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিসমিস খাওয়া কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাই পরিমিত মাত্রায় খাওয়া উচিত এবং অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
ভেজানো কিসমিস ও শুকনো কিসমিসের মধ্যে কোনটা ভালো?
ভেজানো কিসমিস শরীরে সহজে হজম হয় এবং পুষ্টি উপাদান শোষণে সহায়তা করে। তাই অনেক বিশেষজ্ঞ ভেজানো কিসমিস খাওয়ার পরামর্শ দেন।
কিসমিস ওজন কমাতেও কি সাহায্য করতে পারে?
হ্যাঁ, নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় কিসমিস খেলে এর ফাইবার ও প্রাকৃতিক চিনির কারণে ক্ষুধা কমে এবং দীর্ঘ সময় পেট ভরা থাকে, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
কিসমিস খেলে কি পেটের সমস্যা হয়?
অতিরিক্ত কিসমিস খেলে গ্যাস, পেট ফুলে যাওয়া বা হজমের সমস্যা হতে পারে। তাই পরিমাণে মেপে খাওয়া জরুরি।
কোন সময়ে কিসমিস খাওয়া সবচেয়ে ভালো?
সকালে খালি পেটে বা বিকেলে স্ন্যাক্স হিসেবে কিসমিস খাওয়া সবচেয়ে উপকারী। এতে শক্তি বাড়ে ও সারাদিন সতেজ বোধ করা যায়।
কিসমিস খাওয়ার আগে ধুয়ে নেওয়া কি জরুরি?
অবশ্যই জরুরি। কিসমিসের গায়ে ধুলোবালি বা রাসায়নিক পদার্থ থাকতে পারে, যা ধুয়ে ফেললে দূর হয় এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি কমে।
কিসমিসের পরিবর্তে আর কী খাওয়া যেতে পারে?
কিসমিসের বিকল্প হিসেবে খেজুর, শুকনো আপেল বা শুকনো ক্র্যানবেরি বেছে নেওয়া যেতে পারে, যেগুলোও পুষ্টিতে সমৃদ্ধ এবং সুস্বাদু।