রাতে ঘুম আসেনা? সারাদিন গা ম্যাজ ম্যাজ করে? জেনে নিন রাতে ঘুম না আসার কারণ ও তার প্রতিকার!

Related Articles

রাতে ঘুম আসছেনা? সারাদিন গা ম্যাজ ম্যাজ করছে? কোনো কাজে মন বসছে না? জেনে নিন রাতে ঘুম না আসার কারণ ও তার প্রতিকার!

একজন মানুষের সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুম। বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো অত্যন্ত জরুরি। দীর্ঘ দিন ধরে পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুম না হলে স্বাস্থ্যহানির আশংকা রয়েছে।

অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকেন, ঘুম আসে না অথবা ঘুম আসলেও বার বার ঘুম ভেঙে যায়? তাহলে বুঝবেন আপনি ইনসমনিয়া বা অনিদ্রা জনিত রোগের শিকার হয়েছেন। জেনে রাখুন এটি আপনার সাস্থের পক্ষে খুবই ক্ষতিকর। এর ফলে যে যে সমস্যা গুলির সম্মুখীন আপনাকে হতে হবে সেগুলি হল:

  • দিনের বেলা ঘুম পাবে।
  • সারাদিন ঝিমুনি অনুভব হবে।
  • কাজে মনোযোগের অভাব দেখা দেবে।
  • সারাদিন মেজাজ খিটখিটে ও বিষন্ন হয়ে থাকবে।
  • শরীরে ব্যাথা অনুভব হবে।
  • ক্ষিদের পরিমান কমে যাবে।
  • সর্বোপরি স্বাস্থ্যের ক্ষতি হবে।

ঘুম না আসার কারণ

#1/5: এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যারা নাইট শিফটে চাকরি করেন, তারাই বেশি এই অনিদ্রা জনিত রোগে ভোগেন। সারা রাত কাজ করে ভোর বেলা ঘুমানোর রুটিন করে ফেলছেন। যেহেতু ছোট থেকে রাতে ঘুমানোটাই অবভ্যেস, তাই সকালের ঘুমে শরীরের ঘাটতি পূরণ হয় না। ফলে অনিদ্রা জনিত রোগে আক্রান্ত হন।

#2/5: অনেকেই আছেন যারা রাত জেগে পড়াশোনা করেন বা অফিসের কাজ করেন। আবার ঘুম যাতে না আসে তার জন্য সিগারেট এবং চা বা কফি পান করেন। ফলে কাজ শেষে ঘুমানোর চেষ্টা করলেও ঘুমাতে পারেন না। এই ধরণের পানীয় অনিদ্রার বড় কারণ।

#3/5: বর্তমান সমাজ এখন মোবাইল ফোন আসক্ত। রাতে ঘুমানোর আগে ফোনে চোখ রাখে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুস্কর। কিন্তু অনেকেই জানেন না মোবাইলের থেকে নির্গত ক্ষতিকর রশ্মি রাতের ঘুম কেড়ে নিতে পারে। আর জানা থাকলেও তা মানেন কজন?

#4/5: দুশ্চিন্তা হচ্ছে অনিদ্রার আর এক কারণ। রাতে ঘুমাতে গেলেই যত রাজ্যের দুশ্চিন্তা এসে জড়ো হয় মাথায়। মাথায় এক রাশ চিন্তা নিয়ে কখনোই ঘুমানো সম্ভব না। মনে রাখতে হবে, না ঘুমালে দুশ্চিন্তা কমবেনা বরং বাড়বে। শরীর ও মন উভয়েরই সমান ভাবে বিশ্রামের প্রয়োজন। শুয়ে থাকলে তো শরীরের বিশ্রাম হয়, কিন্তু মনের বিশ্রাম? এক রাশ চিন্তা নিয়ে শুলে কখনোই মনকে বিশ্রাম দেওয়া যায় না। ফলে অনিদ্রা জনিত সমস্যার দেখা দেয়।

#5/5: অতিরিক্ত ইলেকট্রনিক গ্যাজেট ব্যবহার, যেমন দিনরাত ল্যাপটপ বা কম্পিউটার নিয়ে বসে থাকা, টিভি তে সিনেমা বা ওয়েব সিরিজ দেখা, মোবাইল-এ সোশ্যাল মিডিয়ায় ডুবে থাকা, বর্তমানে অনিদ্রার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইলেকট্রনিক্স গ্যাজেট থেকে যে ওয়েভ বা তরঙ্গ নির্গত হয় তা অনিদ্রার কারণ।

রাতে ঘুম না হলে করনীয়

#1/5: সারাদিনের একটি রুটিন মাফিক অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এবং সেটিকে পালন করতে হবে। মনে রাখবেন, শরীর ভালো থাকলেই সব কাজ করা যাবে। শরীরকে কষ্ট দিয়ে কোনো কাজ হয় না। রুটিন মেনে সব কাজ শেষ করে সময়ের আগে ঘুমাতে যেতে হবে, তবেই অনিদ্রা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

#2/5: অত্যন্ত জরুরি না হলে রাত জেগে কাজ করা যাবে না। যে কাজ রাতে করার কথা ভাবছেন সে কাজ তো ভোরবেলা উঠেও করা যায়। কোথায় আছে :

“Early to bed and early to rise, is the way to be healthy, wealthy, and wise. Birds sing in the morn to tell us to rise, and he who sleeps late will never be wise.”

তাই ভোর বেলা যতটা মন দিয়ে কাজ করা যায়, রাত জেগে তা সম্ভব না। ভোরবেলা ওঠার অবভ্যেস করতে পারলেই নিদ্রা হীনতা থেকে মুক্তি।

#3/5: প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যায়াম, যোগাসন, ধ্যান বা প্রাণায়াম করলে সারাদিনের ক্লান্তি দূর হয় এবং সতেজ অনুভব হয়। যা মানসিক চাপ ও অনিদ্রা দূর করে।

#4/5: ঘুমানোর আগে অতি অবস্যই মোবাইল দূরে রাখতে হবে। তার পরিবর্তে আপনি কোনো বই পড়তে পারেন অথবা সারাদিনে কি কি কাজ করলেন আর কি কি কাজ বাকি থাকলো তা নিয়ে ভাবতে বা ডায়রিতে লিখতে পারেন। কিন্তু কোনো ভাবেই কোনো কিছু নিয়ে বেশি ভাবা বা দুশ্চিন্তা করা যাবে না।

#5/5: ঘুমানোর আগে চা বা কফি পান করা কখনোই উচিত না। এই ধরণের ক্যাফিন জাতীয় পানীয় ঘুম না আসার অন্যতম বড় কারণ। তার পরিবর্তে ঘুমানোর আগে বেশি করে জল খান, তাতে গ্যাস অম্বল হওয়ার সম্ভাবনা কম হবে এবং ভালো ঘুম হবে।

এর পরেও যদি আপনার ঘুম না আসে, অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। কিন্তু ভুলেও ডাক্তারের পরামর্শ না নিয়ে ঘুমের ওষুধ খাবেন না।

More on this topic

Comments

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

~বিজ্ঞাপন~

Popular stories